Amalendu Thakur

hello

Thursday, February 4, 2016

Mr. India

Mr. India

Amalendu Thakur

Yesterday…
I was watching Ratul taking  swim lessons  from his teacher along with bunch of other kids. I was sitting in one of a row of chair placed along the side of the big swimming pool for the parents to sit and watch their kids. One chair on my left side was empty and next to it a lady was sitting, must be the mother of some kid who are in the water.

Near the middle of the session, one gentleman came, and as he was passing by, probably to find a chair to sit, he saw the lady who was sitting next to the empty chair and says, ‘Hi  ...how are you ..’ , he started talking to her , they must be familiar to each other, both of are of Indian origin. They are talking in English. At a time the gentleman was standing such a way that his not-so-impressive buttocks were becoming an obstacle to my eye which was watching Ratul in his various swimming styles.

Mistake happens  but mistake shouldn’t  be continued ,  the guy was in that position still after 2 minutes, few options came to my mind about what to do with his butt …
   
   pushing him onto his butt  to the water which is 2 to 3 feet away (criminal offence man!) ,
   biting it (really!.. why not ? Tyson bite holyfield’s ear… but this is butt!!..ahh so what..),
   clipping my cell phone onto it and watch Netflix (Yayyy. that’s a good idea!.. at least I can watch    something!)  

I think the guy read my mind… suddenly turn to me and asked me ‘Is anybody sitting there ?’ pointing his finger to the empty chair.
What? All the chairs are here for the parents to sit. The chair he is pointing to ,is empty! , there are no indications that I booked that chair for anybody, and I am sure the distance between my chair and the empty chair AND the distance between lady’s char and the empty chair is equal , (or I should double-check!),  and after all nobody is sitting in the chair, I can see!!… Unless I have an unconventional eyes and above all why he asked me instead of asking the lady to whom he was busy talking all this time! (Weird!!)

All these went through my mind…in a few milliseconds.

I got angry and muttered  ‘Dnat kyalane Banchharam…’ (I watched Golmaal  for at least 25 times!) , but made sure that my lips does not move (Yes , I am a whole hearted Prosenjit fan since the day I understand Prosenjit )

The guy couldn’t understand (not a  Bengali for sure!) …so he asked  ’Sorry ?..”

I looked at his eyes with grin face and replied ‘Yes, Mr. India is sitting there. ’ 

অর্কুটের মৃত্যু

অর্কুটের মৃত্যু

অমলেন্দু ঠাকুর

ফেসবুক তখন খুবই শিশু, অর্কুট তখন এক বলশালী যুবক , খুব অহংকারী ,সবেতেই একটা বেপরোয়া ভাব, মাঝে মাঝেই লঘু গুরু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। গুরুজন দেরও খুব একটা মান্য করে না। অর্কুটের নিজস্ব ক্লাব আছে, প্রচুর তার মেম্বার , আর সেইসব মেম্বার দের নাড়ীনক্ষত্র অর্কুটের হাতের মুঠোয়। এছাড়াও অর্কুটের নানারকম আইনি ও বেআইনি ব্যবসা আছে

একদিন  গৌতম মুনি অর্কুট এর মেম্বার হতে গিয়ে একটা ছোট ভুল করার দরুন , অর্কুট গৌতম মুনিকে মেম্বারই হতে দিল না, ফল হলো মারাত্নক , মুনি অর্কুটকে অভিশাপ দিল ..  

অভিশাপ টা অদ্ভুত ছিল , বলল কোনো গান তুই যদি কাউকে ফোন করে কাউকে শোনাও ,সেই গানের  কথাটা সত্য হয়ে যাবে, আর যে শুনবে , সে তোর  জায়গাটা নিয়ে নেবে, অর্কুট মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো ,এরকম কোনো গান কারুর কাছে গাইবে না। 

কিন্তু হায়রে  নিয়তি , মুনিরা ত অভিশাপ দেয় ফলবার জন্যই, তাই  একদিন একা একা বসে মদ্যপান করতে করতে , ছোট হলেও প্রানের বন্ধু ফেসবুক কে ফোন করলো, এবং হটাতই একটু আবেগপ্রবণ হয়ে গেয়ে বসলো  পুরনো বাংলা ছবির সেই  বিখ্যাত গানটা ... ‘তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে , আমার মরণ যাত্রা যেদিন যাবে..’  কিন্তু গানটা বিখ্যাত হলে কি হবে , অর্কুটের কাছে গানটা হয়ে গেল একদম মারণ গান।  নিন্দুকেরা বলে অর্কুট নাকি প্রেমে কোনোদিন সফল হতে পারে নি, তাই পেটে হুইস্কী পড়লেই , দুঃখে এই গানটাই নাকি তার মাথায় আসত।

ব্যস আর যায়  কোথায়...মুনির অভিশাপ ফলতে  শুরু করল।

মুনির অভিশাপ অনুযায়ী , অর্কুট ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকলো , অন্যদিকে ফেসবুক এর শক্তি বাড়তে থাকলো, ফেসবুক এর ছোটখাট ব্যবসা ফুলে ফেঁপে বাড়তে লাগল। বন্ধুত্বের খাতিরে ফেসবুক প্রথম দিকে  অর্কুট এর প্রতি  বেশ সহানুভুতি দেখাত, অর্কুট যাতে আবার তার পুরনো বৈভব ফিরে পায় , তার জন্য তাকে যারপরনাই সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দিল, কিন্তু কালটা তো কলি , ফেসবুক যখন ধীরে ধীরে ক্ষমতার এর স্বাদ পেতে থাকলো , সে মনে মনে চাইল অর্কুট যাতে আর  না উঠতে পারে, তাকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার প্লান করতে লাগলো

সে বিশ্বের বড় বড় ডাক্তারদের ডাকলো এক নৈশ্যভজে , সেখানে তাদের মোটা  টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের কে এক মারণ টীকা আবিস্কার করার কথা বলল,এই টীকা যে নেবে সে  ফেসবুক আসক্ত হয়ে যাবে, সর্বদা ফেসবুকের নাম কীর্তন করবে, ফেসবুকই হবে তাদের ধ্যান জ্ঞান। লোকে খেতে ,বসতে,পায়খানা করতে ,প্রস্রাব করতে,গাড়ি চালাতে চালাতে , এমনকি যৌন মিলনের সময়ও ফেসবুক এ বুঁদ হয়ে থাকবে!  কি সাংঘাতিক!

যে মানুষ বুড়ো বয়সে মরার সময় বলত ‘একবার নাতির মুখটা শেষ বারের মত দেখে যেতে চাই , সেও নাকি বলবে, ‘বাবা একবার শেষ বারের মত ফেসবুক লগ-ইন করিয়ে দিবি? তাহলে হয়ত একটু সুস্থ বোধ করব।’  

তা যাইহোক ডাক্তাররা রাজী হলো, এত টাকার প্রলোভন কি ছাড়া যায়? কাজ শুরু হলো ,ফেসবুক গেল  লবি করতে, টীকা কে  তো রকারিভাবে পাস করাতে হবে, সরকারী আমলাদের বোঝাতে লাগলো,  এই টীকার কি কি ভাল গুন আছে। 
টিকার প্রভাবে লোকে ফেসবুক এত মত্ত থাকবে,কথা বলা , জোরে জোরে চেঁচানো বন্ধ করে দেবে, ফলে সাউন্ড পলুশান নাকি একবারে কমে যাবে, যে সব স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সবসময় খিটিমিটি লেগে থাকত তারা কথা বলা বন্ধ করে দেবে, সংসারে শান্তি আসবে , ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স নামক বস্তুটি নাকি একেবারে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যারা নিজেদের একাকী ভাবত তারা আর নিজেদের নাকি একা ভাববে না, ঘরের কোনে বসে তাদের সঙ্গে থাকবে কমপক্ষে একশত বন্ধু। তার যখন খুশি যার সাথে মনের গল্প জুড়ে দেবে। কি মজা! ফলে একাকীত্বের জন্য যেসব লোক হতাশা বা ডিপ্রেসেন এ ভুগত সেটা অনেকটা নিয়ন্ত্রন এ চলে আসবে।  

শুধু তাই নয় নিজেদের ছোটবড় কৃতিত্ব তারা ফেসবুক মারফত গোটা বিশ্বকে জানাবার সুযোগ পেল, আগে যেটা প্রায় অসম্ভব ছিল। যারা সেই কৃতিত্বএর কথা জানল, তারা ফেসবুক মারফত-ই বাহবা দিল। যারা বাহবা দিল না , বোঝা গেল হয় তাদের পছন্দ হয় নি বা তারা এতে ঈর্ষান্বিত।

আমলারা দেখল বাহ , এত বেশ ভালই, তারা এগতে রাজি হলো এবং প্রতিশ্রুতি দিল তারা বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে কথা বলে টীকাটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাস করিয়ে দেবে। কেউ কেউ এর নেগেটিভ দিকগুলি নিয়ে একটু গুইগাই  করছিল , তাদের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হলো

 টীকা তৈরী হলো, পাস হলো 

এদিকে...

অর্কুট এর কষ্ট এখন চোখে দেখা যায় না,  
ফুটপাথে শুয়ে থাকে, পরনে ছেঁড়া জামা,গায়ে নোংরা ধুলো , গন্ধ,কেউ তাকে আর চিনতেই পারে না।

একদিন ফুটপাথে বসে বসে ভিক্ষা করছিল, পথচারী দের কাছে খাবার চাইছিল , সকাল থেকে কিচ্ছুটি খায় নি।

 হটাত দেখল একটা রোমিও টাইপের ছেলে আসছে, কাছে আসতেই চিনতে পারল, এই ছেলেটাকে অনেকদিন ধরে দেখছে, বেশ দেখতে সুন্দর, তরতাজা যুবক ,ওকে  মাঝে  মাঝে খাবার দেয়, একটু দয়ালু মনে হয়, এই ছেলেটা মেয়ে মহলে খুব প্রসিদ্ধ , মেয়েরা নাকি ওকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারে না,ফেসবুক নাকি এর ওপর বেশ  ঈর্ষাপরায়ন। সেজন্যই বোধহয় অর্কুট এর একে একটু ভালো লাগে

ফেসবুকের বিশ্বাসঘাতকতা সে জীবনে ভুলবে না! কাছে আসতেই ছেলেটা অর্কুট এর হাতে একটা খাবারে প্যাকেট গুজে দেয়,অর্কুট কৃতার্থ চোখে তাকায়। খুব ইচ্ছা করে এই সৌম্যাকান্তি , মেয়েমহলে প্রসিদ্ধ ছেলেটার নাম জানতে ,মনের ইচ্ছাটা আর চেপে রাখতে পারে না অর্কুট , 

ভাঙ্গা ভাঙ্গা , ক্লান্ত গলায় বলে   ‘তোমার নামটা কি বাছা!’

‘আমার নাম হোয়াটসআপ - ছেলেটি সপ্রতিভ উত্তর দেয়

‘বাহ,  কি সুন্দর নাম!’  - অর্কুট বলে

একটু ভাব জমানোর চেষ্টা করে হোয়াটস আপের সাথে,  ছেলেটি বেশ মিশুকে টাইপের ,সরল কথাবার্তা বলে,  ছেলেটার বাবা মা সম্মন্ধে জিজ্ঞেস করে, জানতে পারে ওর  মা নেই, কয়েকটা ছেলে ওকে মেলাতে কুড়িয়ে পায় , তারাই ওকে মানুষ করে,  তারাই ওর বাবা

মা হারা ছেলেটির প্রতি অর্কুট এর  খুব মায়া হয়,  পরক্ষনেই  মনে মনে হাসে, তার আবার অন্যের ওপর মায়া করা সাজে? তার ওপর কে মায়া করে তার নেই ঠিক

হঠাৎ  অর্কুট এর মনে একটা মতলব জাগে,

এই ছেলেটির এত পপুলারিটি , এটাকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু করা যায় , মনের মধ্যে একটা আশার আলো  উঁকি মারে ,সে আর হোয়াটস আপ যদি একসাথে কিছু করে, তাহলে সে হয়ত এই ভিকিরি গিরি  থেকে হয়ত কিছু ওপরে  উঠতে পারবে তারপর ধীরে ধীরে ফেসবুক এর ওপর এমন প্রতিশোধ নেবে, কেউ আর তার ওপর আঘাত করার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারবে নাছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু কথা ভেবে ফেলে অর্কুট, ভিকিরি হলে কি হবে , মাথার বুদ্ধিটা তো ফেসবুক কেড়ে নিতে পারে নি!

সে সততার সাথে সবকিছু করত, কোনদিন অসত উপায়ে কিছু করে নি, যার জন্য তার এই  পরিনতি  , সোজা আঙ্গুলে ঘি ওঠে  নি , তাই আঙ্গুল টা যে এবার বাঁকানোর সময় এসেছে , তা অর্কুটের আর বুঝতে সময় লাগে না

এরই মধ্যে ছেলেটা অর্কুট কে ওর নাম জিজ্ঞেস করে অর্কুট ওর  নাম  বলে, ছেলেটা বিস্ময়ে ফেটে পরে,
‘ওহ আপনিই অর্কুট কাকু! আমার বাবাদের মুখে আপনার নাম শুনেছি’,পরে একটু দুখের সাথে বলে, ‘এখন অবশ্য আপনাকে নিয়ে বাবারা খুব হাসাহাসি করে’

‘সবই কপাল বাছা!’ – অর্কুট ম্লানমুখে বলে। মনে মনে মতলব ভাঁজে কিভাবে ছেলেটাকে নিজের দিকে টানা যায়

কথায় কথায় জানতে পারে ওর  বাবারা ওর বিয়ে নাকি খুব এক  বড়লোকের মেয়ের সাথে করার চেষ্টা চরিত্র করছে
‘বাহ এত খুব ভালো কথা, তা মেয়েটি কেমন, তুমি দেখেছ?’ - অর্কুট জিজ্ঞেস করে।

‘না , দেখতেও চাই না  হোয়াটসআপ বলে

'কেন! তোমার বুঝি মেয়ে পছন্দ না!, তা তোমার পিছনে এত মেয়ে পাগল!  শুধু একটা মেয়েকে কি আর ভালো লাগে!’ -  অর্কুট একটু কৌতুক করে বলে

‘না তা নয়, আমার বাবারা খুব লোভী , মোটা টাকার লোভে ওরা আমাকে আমার হবু শ্বশুর বাড়িতে আমাকে ঘরজামাই করে দেবার প্লান করছে, সেটা আমার একেবারেই পছন্দ না’ -  ছেলেটা বলে

অর্কুট একটু ধাক্কা খায়, ভেবেছিল ছেলেটাকে নিজের কাছে টানবে,এখন ঘর জামাই হয়ে গেলে সে গুড়ে বালি!

‘আসলে এরা তো আমার নিজের বাবা না ,তাই’ – বিষন্নচিত্তে হোয়াটসআপ বলে।

‘আমি আমার মাকে খুব মিস জানেন কাকু , মা থাকলে এটা হতে দিত না’ - হোয়াটসআপ আবার বলে

 ‘তা কে সেই ধনী লোক, যে তোমাকে ঘরজামাই করতে চায়?’ -অর্কুট উত্সাহিত ভাবে জিজ্ঞাসা করে

‘উনি এখন বিশ্বের অন্যতম এক ধনী , ওনার  বিশাল এক ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি আছে ,উনি একটি টীকা বানিয়েছেন , যেটা সকলকে নিতেই হয়, সরকার থেকে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছেওই  টীকা টা আসলে  একটা  সাংঘাতিক ড্রাগ , সেই  ড্রাগ  বিক্রি করে  ওনার  আঙ্গুল  ফুলে  একদম কলাগাছ  হয়েছে’ -   ছেলেটা  বলে

অর্কুট এর বুকটা ধরাস করে উঠলো, তাহলে কি...না না হতেই পারে না ...নিজেই নিজেকে সান্তনা দিতে থেকে অর্কুট
‘ওনার নাম ফেসবুক’ -  হোয়াটসআপ  ধীরে ধীরে ধীরে বলে

অর্কুট এর পায়ের তলায় মাটি যেন সরে গেল, সে চোখে অন্ধকার দেখল, তার ভগবানের ওপর সমস্ত বিশ্বাস চলে গেল, ফ্যালফ্যাল করে শুন্য দৃষ্টিতে হোয়াটসআপের দিকে তাকিয়ে রইলো যাকে নিয়ে সে এত স্বপ্ন দেখল ! আশার একটা আলো দেখল, সেই  হোয়াটসআপ  কিনা  হয়ে গেল তার চরম শত্রু ফেসবুকের ঘরজামাই! ইশ্বরের কি নিষ্ঠুর পরিহাস!!

এদিকে টীকার প্রভাবে লোকে ফেসবুকে একদম আচ্ছন্ন হয়ে আছে। বন্ধুবান্ধবেরা আর নিজেদের মধ্যে কথা প্রায় বলে না বললেই চলে। ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা বন্ধ করে ফেসবুকে বুঁদ হয়ে থাকে।  বহু সংসারে নেমে এসেছে শান্তি, স্বামী-স্ত্রী র কথোপকথনের মাধ্যমে যে কলহের উতপত্তি হইত, সেই কথোপকথনই তো আর হয় না, শান্তি না এসে কি আর পারে? তবে সমালোচকেরা বলছে এটা ঠিক শান্তি নয় , এ হল গিয়ে ‘শ্মশানের শান্তি’ ‘। তবে তাদের কথা কে আর পাত্তা দেয়, যখন সঙ্খ্যাগরিষ্ঠ হয় নেশাখোর তখন যারা নেশা করে না তাদের কথা কে শোনে ? উলটে তাদেরই টিটকিরি শুনতে হয়।

হোয়াটসআপ এর বিয়ে হয়ে গেছে খুব ধুমধাম করে অর্কুটকে নিমন্ত্রন করা হয়েছিল। ও যায়নি, হোয়াটসআপ কে হারানোর শক্‌টা এখন কাটিয়ে উঠতে পারে নি। তার শরীরও ক্রমশঃ দুর্বল হতে শুরু করেছে , অর্ধাহারে , অনাহারে থেকে থেকে শরীরে মনে হয় কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে। মাঝে মাঝেই কেমন জ্বালা করে সারা দেহ।

‘ক্রিং  ক্রিং...’ - অর্কুটের মোবাইল ফোনটা হঠাৎ বেজে ওঠে।

‘কে ?’ – অর্কুট বলে ওঠে।

‘জানি তুমি আমার ওপর রেগে আছ, তোমার ওপর আর নজর দেয়া হয় না সেভাবে, তাই বলে তুমি যেখানে সেখানে পথে ঘাটে পড়ে থাকবে ? আমাকে তো একটু জানাবে ?’ – ফোনের ওধার থেকে আওয়াজ আসে।

অর্কুট বুঝতে পারে কার ফোন। ইনি ওর পিতা গুগুল। 
পিতার সাথে তার অনেকদিন কথাবার্তা নেই। পিতা গুগুল তাকে কোনোদিনই সেভাবে সাহায্য করে নি। তার অন্য ছেলেদেরই সে বেশি ভালবাসত।  তার প্রতি পিতার ভালবাসার যেন কোথায় একটা ঘাটতি ছিল। সম্প্রতি তিনি তার অন্য এক পুত্র গুগুলপ্লাস কে নিয়ে খুব ব্যস্ত, তাকেই সর্বদা সময় দেয়, অর্কুটের দিকে নজরই দিত না। অর্কুট কিন্তু গুগুলপ্লাস কে খুবই ভালবাসে। পিতা হিসাবে গুগুল সব দায়িত্বই পালন করেছেন, একথা যদিও সবাই জানে।  তিনি নিজেও খুব ব্যস্ত লোক। বহু লোককে সাহায্য করে থাকেন। তাঁর কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে কাউকে নাকি খালি হাতে ফিরতে হয় নি।  

গুগুলের বিভন্ন সব ব্যবসা আছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল  ওনার একটা প্রাইভেট ডিটেকটিভ এজেন্সি আছে। দুনিয়ার হেন কোনো বস্তু নেই যে এই এজেন্সি খুঁজে বার করতে  না। বেশ হোমরা-চোমরা গোছের একজন ব্যক্তি ইনি।

‘না আমি ঠিক আছি...কোনো সাহায্যের প্রয়োজন নেই’ – অর্কুট উত্তর দেয়।  

‘পাগলামি কোরো না , আমি গাড়ী পাঠাচ্ছি, এক্ষুনি চলে আসবে, শুনলাম তুমি গুরুতর অসুস্থ, তোমার ডাক্তার দেখানো দরকার।‘ – গুগুল গম্ভীরভাবে বলে।

অর্কুট কিছু বলে না , ফোন রেখে দেয়। ভিতরে একটু ইচ্ছা হয় , বাবার সাথে দেখা করার, পুরন স্মৃতিগুলো ভেসে ওঠে, বাবা যখন তাকে প্রানের থেকেও বেশি ভালবাসত। তখন ও খুব ছোট ছিল।

এদিকে...

ফেসবুক আর হোয়াটসাপ এক হয়ে যাওয়ায় তাদের ব্যবসাপত্তর এখন রমরমিয়ে চলছে। আর কিছু মারাত্মক টীকা তৈরী হয়েছে এবং পাস করানো হয়েছে। তাই লোকে এখন ফেসবুক আর হোয়াটসাপ এ সর্বদা দুবে থাকে। কিছু কুপ্রভাব ইতিমধ্যে দেখা দিতে লাগল। লোকজন ঠিক করে ঘুমায় না, মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ে, সকালে যখন অফিস যায় , তখন চোখ লাল হয়ে থাকে। অফিসে গিয়েও ঠিকঠাক করে কাজে মন বসাতে পারে না।

কিছু কিছু সংসারে অশান্তি হতে শুরু হল, কারন টীকা সবাই কে ঠিক প্রভাবিত করতে পারল না। হয়ত স্ত্রী টীকা নিয়ে প্রভাবিত , স্বামীর ক্ষেত্রে হল না, তখন সংসারে লড়াই হতে শুরু করল।

কিন্তু যেহেতু বেশিরভাগ লোক এতে আচ্ছন্ন , খুব কম লোকই এর কুপ্রভাবটা দেখতে পেল, তাই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মত লোক বেশি পাওয়া গেল না।

ফেসবুক এবং হোয়াটসাপ মিলিতভাবে দূরদর্শন এ বিবৃতি দিল, এগুল নাকি নিতান্তই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এসবের কোনো ভিত্তি নেই, এসব শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে।  

এদিকে ...

অর্কুট কে গুগুলের পাঠান গাড়ী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ডাক্তার ভালভাবে পরীক্ষা করেছেন। সংবাদ খুব একটা ভাল না। মারন ব্যাধি তে আক্রান্ত হয়েছে অর্কুট। এ রোগ ভাল হয় না। ধীরে ধীরে নাকি জীবনদ্বীপ নিভে যাবে।

অর্কুট পিতা গুগুল কে জানাল , ও শেষ জীবনটা ব্রাজিল এ থাকতে চায়, সেখানেই ওর ব্যবসা ছিল, এখন চলে ,  ব্রাজিলের লোকেরা ওকে খুব ভালবাসে।  গুগুল সেইমত অর্কুটের ব্রাজিল যাবার সব বন্দোবস্ত করে দিল।  শেষজীবনটা অর্কুট ব্রাজিলে বন্ধুবান্ধবদের মাঝে ভালভাবেই কাটাল।

তারপর এল সেই দিন ৩০শে জুন, ২০১৪, অর্কুট মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ল।
যারা সত্যিই তাকে ভালবাসত তারা খুবই মর্মাহত হল, কেউ কেউ বলল তারা জানেনা অর্কুট কে ছেড়ে কিভাবে তারা জীবন কাটাবে।

অর্কুটের ইচ্ছামত তার কিছু অঙ্গ দান করা হল অপরের সাহায্যার্থে ।

তারপর সবরকম নিয়ম মেনে অর্কুটকে কবর দেয়া হল।


অনেকদিন পর অর্কুটের বিছানার তলা থেকে একটা চিরকুট পাওয়া গেল , তাতে ছোট্ট করে লেখা ছিল, ‘সারাজীবন কেউ থাকে না, সবাইকে একদিন যেতে হবেই, জগতের এই নিয়ম মেনে আমিও যাচ্ছি। যারা আমাকে ভালবেসেছ, তাদেরকে হয়ত আরও অনেক কিছু দেবার ছিল, খুবই দুঃখিত বেশি কিছু আর দিতে না পারার জন্য।‘ – অর্কুট।